সত্যের সন্ধানে সত্যের মুখোমুখি

মনোযোগী পাঠকদের একটু মনোযোগ কামনা করছি। শান্তি বর্ষিত হোক সত্যের পথিকদের প্রতি। আশা করছি ভাল আছেন নিজেদের মত করে। যারা এই লেখা পড়ছেন নেটে বসে অথবা পত্রিকায় পাতায় (অবশ্যই আশা করতে পারি) তারা নিশ্চয়ই চিন্তাশীল ও স্বাধীন মতের অধিকারী। বিজ্ঞানের এই যুগে নিশ্চয়ই আমি ভুল কিছু আপনাদের অন্তরে ঢুকাতে পারব না। আমার আজকের লেখাটা একটু মনোযোগের সাথে পড়ার অনুরোধ রইল। আমি যা জানি তাই সব সত্য নয়, তবে আমি সত্যের সাথে থাকতে চাই। সবাই আসলে সত্যের সন্ধানী-

সত্য কী? খুবই সাধারণ একটা প্রশ্ন। কিন্তু উত্তরটা দেয়া একটু চিন্তার প্রয়োজন। সত্য হলো- আপনার পরিচয়! আপনি এখন একটা পরিচয়ের ধারক ও বাহক। একটা সময় ছিল যখন আপনার কোনো অস্তিত্ব ছিল না, আপনার আলোচনা হত না। তারপর এক সময় আপনার অস্তিত্ব এই পৃথিবী টের পেল। একটু সময় আপনার জন্ম পদ্ধতি ও বেড়ে ওঠা নিয়ে ভেবেছেন কী? দয়া করে একটু ভাবুন।
আরেকটি বড় সত্য হলো- আপনি এখন শ্বাস ছাড়া বাঁচতে পারেন না। বিজ্ঞানের এই যুগেও শ্বাসের বিকল্প অথবা অক্সিজেন বানাতে পারে না কেউ। সত্য হলো- আপনি যেমন অস্তিত্বহীন অবস্থায় এসেছিলেন, তেমনি একদিন অস্তিত্বহীন হয়ে যাবেন। দেহ থেকে প্রাণটা একবার বের হয়ে গেলে কখনো আর  কেউ তা ঢুকাতে পারে না। এবার আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, আসল সত্য হলো- আপনি আসলে খুবই দূর্বল আর অসহায়! মানতে পারছেন না? তাহলে আরকটু ভাবুন!

সত্য কী? সত্য হলো- আপনি আপনার চারপাশে যা কিছু দেখছেন সবকিছুই ধ্বংসশীল। এই পৃথিবী আর পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই ধ্বংসের দিকে ছুটে চলছে। আমি, আপনি কিংবা এই পৃথিবী যখন ধ্বংসশীল, তাহলে থাকবে কী বাকি? বাকি থাকবে…. নিশ্চয়ই বাকি থাকবে! পাঠক একটু ভাবুন….
আবারো ভাবুন।

আপনার মাথার উপরে সুনীল আকাশ, গ্রহ-নক্ষত্র , চাঁদ-সুর্যের কথা ভাবুন। সূর্য ছাড়া তো পৃথিবীর অস্তিত্ব কখনো সম্ভব নয়। কোনো বিজ্ঞানী কি পারবে সূর্যের মত কোনো নক্ষত্র বানাতে? অথবা চোখ ছাড়া আমাদের দৃষ্টি শক্তি! একটু মনোযোগের সাথে, সময় নিয়ে ধ্যান করুন আর ভাবুন। আপনার সৃষ্টি প্রক্রিয়া নিয়ে, আপনার দৈহিক কাঠামো আর বিবেকের সীমাবদ্ধতায়। ভাবুন আপনি আপনার চারপাশ আর এই পৃথিবী নিয়ে। কী পেলেন মনের ভিতর? কিছুই না?

আগে তো আপনার মনটা খালি করুন। বিবেককে করুন স্বাধীন, অন্তরকে করুন প্রসারিত। পেয়ে যাবেন সেখানে এক শক্তিমানের বাস অথবা কোনো অদৃশ্য শক্তির ভয়!
ঠিক। সত্য হলো একজন সর্ব শক্তিমান স্রষ্টার অস্তিত্ব! যিনি আপনার মালিক, এই জাহানের মালিক।
আপনি মানতে পারছেন না? স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই? আরে ভাই! এটাকেই চরম সত্য ভাবছেন কেন? আপনার কাছে যা আছে তার সবই সত্য, তাতো নাও হতে পারে বরং এই ভাবে ভাবুন- যা কিছু সত্য তা আমার। আমি সত্যের সাথে আছি। বিষয়টা আরেকটু ভাবার জন্য বলছি।

একজন সর্বশক্তিমানের অস্তিত্বের পর আমাদের ভাবিয়ে তুলে, মৃত্যুর পর আমাদের কী হবে? কী হয় মৃতদের সাথে! পৃথিবী যখন ধ্বংস হয়ে যাবে তখন কী হবে তারপর?????????????????????????
???????????????????????????????
তাই আমি আপনাদের একটু ভাবতে বলছি। কারণ আমাদের এই জগতের জীবনটা সীমিত! কখন না জানি শেষ হয়ে যায় শ্বাসক্রিয়ার খেলা। তারপর কী হবে আমার? তাই এখনি ভাবার দরকার। আমি আপনাদের করজোড়ে নিবেদন করছি স্রষ্টাকে নিয়ে ভাবতে, তার দেয়া জীবন বিধানকে নিয়ে ভাবতে (তা যে কোনো ধর্মের হোক না কেন)। আমি আপনাদের ভাবতে বলছি আপনাদের বর্তমান ধর্মীয় বিশ্বাসকে নিয়ে। ভাবতে বলছি, কী করছেন ধর্মের নামে?
কী আচার পালন করছেন, চলছেন কোন পথে ধর্মের নামে? আপনি যদি এক শক্তিমানের কাছে প্রার্থনা ছাড়া অন্য কিছু করেন তাহলে আপনার কাছে আমার করুণ আকুতি- একটু ভাবুন আপনার ধর্মীয় রীতি নিয়ে ( যে কোনো ধর্মের হোক না কেন), আপনার বিশ্বাস নিয়ে। দেখুন জোড়ালো কীনা, যদি জোড়ালো না হয় তাহলে আপনি ভুলের উপর আছেন। ভাল করে ভাবুন- কোথায় আছে এক শক্তিমানের পথ? কোনটা সত্য?
আমি আপনার কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চেয়ে বলছি একটু বিবেকের কাছে যান। এক সত্তার কাছে প্রার্থনা করুন, যেনো আপনাকে তিনি সত্যের মুখোমুখি দাঁড় করান।  আমি আপনাকে সেই সত্যের মুখোমুখি হতে বলছি। আমাদের একজন স্রষ্টা, তিনি একক সত্তা, অদ্বিতীয়, তার সমকক্ষ কেউ নয়, তিনিই সর্বশক্তিমান। তিনি আমাদের মালিক ও প্রভু। আমরা শুধু তারই কাছে প্রার্থনা করবো আর তার গোলামি করবো।

যদি আপনি আমার এই সত্যের বিরোধী হোন তাহলেও ক্ষতি নেই। একটুর জন্য আমার কথাটা মেনে নিয়ে একটু ভাবতে তো কোনো আপনার অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আধাঁর কখনো আলোকে গ্রাস করে না বরং আলো এসে আঁধারকে দূর করে।

আমি আপনাকে এক সত্তার অস্তিত্বের বিশ্বাসী হতে বলছি এই কারণে যে, আমি এক সত্তায় বিশ্বাসী। আমি জানি মৃত্যুর পর আমাদের সবাইকে এই সত্তার মুখোমুখি হতে হবে বিচারের কাঠগড়ায়। আমাদের পাপ-পূণ্যের হিসেব হবে। পূণ্যের জন্য রয়েছে অভাবনীয় স্বর্গের পুরষ্কার আর পাপের জন্য রয়েছে তেমনি অকল্পনীয় শাস্তির নরকের স্থান।

আপনি মৃত্যুর পরের জীবনে বিশ্বাসী নন? কোনো সমস্যা নেই। একবার ভাবুন তো, যদি সত্য হয়ে যায় তাহলে আপনার কী অবস্থা হবে? (একটু সময়ের জন্য আপনার যুক্তিতে ধরে নিলাম, মৃত্যুর পর কিছু নেই)যারা বিশ্বাসী, তারাতো মৃত্যুর পরের জীবন থাকলেও সমস্যা নেই না থাকলেতো আরো নেই!

আমার কথা আপনার মানার কোনো দরকার নেই, আপনি একজন যুক্তবাদী মানুষ! আপনি শুধু আমার কথায় উৎসাহী হয়ে এক স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসী ধর্মীয় বই পড়ুন। নিজেকে জানুন, আপনার স্রষ্টাকে জানুন। জানতে কোনো দোষ নেই।

আমি আপনাকে এখন আমার জানা সত্যের কথা বলছি, আমার স্রষ্টা একক সত্তা! তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আমি শুধু তারই গোলামি করি (দুনিয়ার আর কারো নয়)। আমি আরো বিশ্বাস করি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তারই গোলাম ও প্রেরিত দূত এবং আমার অনুসরণীয় আদর্শ।
আমার কথায় আপনি দূঃখ পেলে কিংবা মতের ভিন্নতায় থাকলে তর্ক না করে ভাবতে বলব, একটু ভাবুন, সময় নিয়ে ভাবুন। আরেকটু পড়াশোনা করুন। আমার লেখাটা আরেকবার মনোযোগ সহকারে পড়ুন। সকাল সন্ধায় ইয়া হাদি, ইয়া রাহিম, ইয়া রহমান চোখ বন্ধ করে পড়ুন।

যদি একমত না হতে পারেন, ভুলে যান বিষয়টা। আমি আন্তরিকভাবে আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থি! আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য। দয়া করে তবুও লেখাটা নিয়ে বিতর্ক করবেন না। আপনার সর্বাজ্ঞীন কল্যাণ আর মঙ্গল কামনা করছি দুই জগতের জন্য। ভাল থাকুন।

#বক্তাদের_উদ্ভট_আষাঢ়ে_গল্প_ও _মিথ্যা_বাকপটুতা_প্রকাশের_পরিণতি: নিজের জ্ঞান, পান্ডিত্ব্য জাহির করার জন্য মিথ্যা-বানোয়াট গল্প, কল্পবিলাস কাহিনি ও উদ্ভট, আজেবাজে, অনর্থক কথা-বার্তা বলা ইসলামে নিষেধ। আজকাল ওয়াজ বা তাফসীর মাহফিলে বক্তাদের মুখে এসবই বেশি শোভা পায়! জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে আমার প্রিয়তম এবং অবস্থানে আমার নিকটতম ব্যক্তিদের কিছু সেই লোক হবে যারা তোমাদের মধ্যে চরিত্রে শ্রেষ্ঠতম। আর তোমাদের মধ্যে আমার নিকট ঘৃণ্যতম এবং অবস্থানে আমার থেকে দূরতম হবে তারা; যারা অনর্থক অত্যধিক আবোল-তাবোল বলে ও বাজে বকে এমন বাচাল ও বখাটে লোক; যারা আলস্যভরে বা কায়দা করে টেনে-টেনে কথা বলে। আর অনুরূপ অহংকারীরাও।’’ ( তিরমিযী: ২০১৮) আবূ উমামা (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ন্যায়সঙ্গত হওয়া সত্ত্বেও ঝগড়া পরিহার করবে আমি তার জন্য জান্নাতের বেষ্টনীর মধ্যে একটি ঘরের যিম্মাদার; আর যে ব্যক্তি তামাশার ছলেও মিথ্যা বলে না আমি তার জন্য জান্নাতের মাঝখানে একটি ঘরের যিম্মাদার আর যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থিত একটি ঘরের যিম্মাদার। ( আবু দাউদ: ৪৮০০)

via সুখ-সম্মৃদ্ধ জীবনের পথে- ১২

একত্ববাদীরাই আল্লাহ ও তার সাক্ষাতকে ভালোবাসে… (দরসে হাদীস)

عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ – صلى الله عليه وسلم – قَالَ: “مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ أَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ، وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ كَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ”
বাংলা: আবূ মূসা আশ্‘আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাতকে ভালবাসে, আল্লাহ্ও তার সাক্ষাত ভালবাসেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাত ভালবাসে না, আল্লাহ্ও তার সাক্ষাত ভালবাসেন না। সূত্র: বুখারী: ৬৫০৮/৬১৪৩, মুসলিম: ২৬৮৬
Narrated Abu Musa: The Prophet (ﷺ) said, “Whoever loves the meeting with Allah, Allah too, loves the meeting with him; and whoever hates the meeting with Allah, Allah too, hates the meeting with him.”

সামসুল আলম দোয়েল

একত্ববাদীরাই আল্লাহ ও তার সাক্ষাতকে ভালোবাসে… (দরসে হাদীস)

عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ – صلى الله عليه وسلم – قَالَ: “مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ أَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ، وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ كَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ”
বাংলা: আবূ মূসা আশ্‘আরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাতকে ভালবাসে, আল্লাহ্ও তার সাক্ষাত ভালবাসেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাত ভালবাসে না, আল্লাহ্ও তার সাক্ষাত ভালবাসেন না। সূত্র: বুখারী: ৬৫০৮/৬১৪৩, মুসলিম: ২৬৮৬
Narrated Abu Musa: The Prophet (ﷺ) said, “Whoever loves the meeting with Allah, Allah too, loves the meeting with him; and whoever hates the meeting with Allah, Allah too, hates the meeting with him.”

ব্যাখ্যা: আল্লাহর সাক্ষাৎ ভালোবাসতে চাইলে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা থাকতে হবে, আর ভালোবাসার নিদর্শন হলো তার হুকুম আহকাম মেনে চলা। ইসলামের প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্যই হলো প্রকৃত মুসলিমের পরিচয়। আল্লাহকে ভালোবাসা মানে ঈমানের পরিপূর্ণ স্বাদ লাভ করা। আল্লাহ বলেন-

যে আল্লাহর সাক্ষাৎ কামনা করে (সে…

View original post 347 more words

তাফসীর: সূরা ২৯ আনকাবুত: ১২-১৩: পরকালে কেউ কারো (পাপের) বোঝা বহন করবে না

পরম করুনাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে-

وَقَالَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِلَّذِينَ آمَنُوا اتَّبِعُوا سَبِيلَنَا وَلْنَحْمِلْ خَطَايَاكُمْ وَمَا هُمْ بِحَامِلِينَ مِنْ خَطَايَاهُمْ مِنْ شَيْءٍ ۖ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ

১২. কাফিরগণ ঈমানদারদের বলে, ‘তোমরা আমাদের পথ অনুসরণ করো; আমরা তোমাদের পাপভার বহন করব! কিন্তু ওরা তো তোমাদের পাপভারের কিছুই বহন করবে না। ওরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী।

তাফসীর: কাফিররা মিথ্যাবাদী, কেননা তারা দাবি করে- যদি তাদের ধর্ম তথা (প্রাক ইসলামী যুগের) পূর্বে অনুসৃত ধর্মে ফিরে যায়, তাহলে ওরা পাপের ভার বহন করবে, অথচ এটা কীভাবে সম্ভব যে, একজন আরেকজনের পাপের বোঝা বহন করবে!
অথচ কিয়ামতের দিন এমন হবে যে, সেদিন কেউ কারো বোঝা বহন করবে না। এমনকি আত্মীয়রাও এক অপরের বোঝা বইবে না।(দ্রষ্টব্য: সূরা ফাত্বির: ১৮) সেখানে এক বন্ধু অপর বন্ধুর খোঁজ নেবে না। তাদের মধ্যে পৃথিবীতে যতই বন্ধুত্ব থাকুক না কেন। এখানেও উক্ত বোঝা বহনের কথা খন্ডন করা হয়েছে।

পরকালে কেউ কারো উপকারে আসবে না: অনেক ভন্ড পীরেরা দাবি করে থাকে, তারা তাদের মুরীদদের কবরে সাহায্য করবে, পরকালে সুপারিশ করবে, জান্নাতে নিয়ে যাবে..ইত্যাদি! অথচ কুরআনে বলা হয়েছে-
“হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর এবং সেদিনকে ভয় কর, যেদিন পিতা সন্তানের কোন উপকারে আসবে না, সন্তানও তার পিতার কোন উপকারে আসবে না।আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। সুতরাং পার্থিব জীবন যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রতারিত না করে এবং শয়তান যেন কিছুতেই আল্লাহ সম্পর্কে তোমাদেরকে ধোঁকায় না ফেলে। (সূরা ৩১ লুকমান: ৩৩)

আল্লাহ আরো বলেন-
“সেদিন পলায়ন করবে মানুষ তার ভ্রাতার কাছ থেকে, তার মাতা, তার পিতা, তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে। সেদিন প্রত্যেকেরই নিজের এক চিন্তা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখবে।” (সূরা ৮০ আবাসা:৩৪-৩৭)
কেয়ামতে কেউ কারো কোনো উপকারে আসবে না এই সম্পর্কে আরো আয়াত:
৭০ তম সূরা মাআরিজ: ১০-১১; ২৩তম সূরা মুমিনুন: ১০১; সূরা ২ বাকারা: ৪৮

পরকালে কেউ কারো বোঝা বহন করবে না: আল্লাহ বলেন: “কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্মীয়ও হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে, সে সংশোধন করে, স্বীয় কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন।” (সূরা ৩৫ ফাতির: ১৮)

وَلَيَحْمِلُنَّ أَثْقَالَهُمْ وَأَثْقَالًا مَعَ أَثْقَالِهِمْ ۖ وَلَيُسْأَلُنَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَمَّا كَانُوا يَفْتَرُونَ

১৩. ওরা অবশ্যই নিজেদের পাপভার বহন করবে এবং তার সঙ্গে আরও কিছু পাপের বোঝা। এবং ওরা যে মিথ্যা উদ্ভাবন করে, সে সম্পর্কে কিয়ামতের দিন অবশ্যই ওদেরকে প্রশ্ন করা হবে।

তাফসীর: কাফির নেতারা ও ভ্রষ্টতার দিকে আহবানকারীরা শুধু নিজেদের বোঝাই বইবে না; বরং তার সাথে ঐ সকল লোকদের পাপের বোঝার (সমপরিমাণ) ভার তাদের উপর বর্তাবে হবে, যারা তাদের চেষ্টায় পথভ্রষ্ট হয়েছিল। এ বিষয়টি সূরা নাহলের ২৫নং আয়াতেও বর্ণিত হয়েছে। হাদীসের মধ্যে আছে, ‘‘যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে আহবান করে (দাওয়াত দেয়) সে ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ সওয়াব লাভ হবে। এতে তাদের সওয়াব থেকে কিছু মাত্র কম হবে না। আর যে ব্যক্তি অসৎ পথের দিকে আহবান করে সেই ব্যক্তির ঐ পথের অনুসারীদের সমপরিমাণ গোনাহর ভাগী হবে। এতে তাদের গোনাহ থেকে কিছুমাত্র কম হবে না।’’ (মুসলিম:২৬৭৪)

দ্রষ্টব্য: তাফসীরে ইবনে কাসীর, আহসানুল কুরআন, তাবারী

সম্পাদনায়: সামসুল আলম দোয়েল (নীল মুসাফির)